২। জরিফা বেগম সারা দিনকাজের পর গৃহে ফিরেআসেন। তিনি তার শোয়ারঘরে ঢুকে সব সময়ক্লান্ত বোধ করেন। খাট, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি ইত্যাদি সবকিছুর অবস্থান এমনভাবে রয়েছে যে, ঘরটি কোনোভাবেইতাকে আকর্ষণ করে না। তারবোন বেড়াতে এসে বসার ঘরেঢোকে এবং কিছু সময়পর শোবার ঘরে এসে তাকেআসবাব বিন্যাসের শিল্পনীতি সম্পর্কে ধারণা দেন ।
২। জাওয়াদ ও জারিফ দুই ভাই। তারা দেখতে অনেকটা তাদের দাদার মতো হয়েছে। তাদের বড় চাচারও দুইটি পুত্রসন্তান আছে। কিছুদিন আগে জাওয়াদের ছোট চাচার প্রথম পুত্রসন্তানের জন্ম হয়েছে। এ সংবাদ শুনে তাদের দাদি মর্মাহত হন। জাওয়াদের দাদা এ নিয়ে তার দাদিকে মন খারাপ করতে নিষেধ করলেন এবং আরও বললেন “সন্তান জন্মের ব্যাপারে মানুষের করণীয় কিছু নেই। ”
১। আট বছর বয়সীসেজান বরাবরই নিজ আগ্রহে পড়তেবসে। পড়া শেষে সেনিজ থেকেই বইগুলো ব্যাগে গুছিয়ে রাখে। বাবা বিষয়টি খেয়ালকরে তাকে ধন্যবাদ দেয়।এক দিন সেজানের মাসেজানকে স্কুলে তার বন্ধুর সাথেঝগড়া করতে দেখেন। বাসায়ফিরে তিনি সেজানের কাছথেকে ঝগড়ার কারণ জেনে নেনএবং তাকে বন্ধুর সাথেমিলেমিশে চলতে বলেন। তিনিকখনো সেজানের সামনে কারও সাথে উঁচুস্বরে কথা বলেন নাএবং কারও প্রতি অশ্রদ্ধাপূর্ণআচরণ করেন না।
২। আজাদ রহমান ওসায়া হোসেনের মাঝে ছোটখাটো বিষয়নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয়।এমনি এক মুহূর্তে তাদেরচার বছরের সন্তান ইনান মায়ের সাথেখেলা করার ইচ্ছা প্রকাশকরে। মায়ের কাছে সাড়া নাপেয়ে সে বাবার কাছেবাইরে বেড়াতে যাওয়ার বায়না ধরে। বাবা তাকেধমক দিয়ে চুপ করে বসেথাকতে বলেন। বিষয়টি খেয়াল করে দাদি তাকেগল্প শোনানোর কথা বলে কাছেডেকে নেন। এমন ঘটনাইনানের পরিবারে প্রায়ই ঘটে। এতে করেদাদির সাথে ইনানের বেশভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে।
১। সানার বয়স পাঁচ বছর।তাকে তার সমবয়সীদের তুলনায়ছোট দেখায়। ইদানীং সে অল্পতেই রেগেযায়। দিন দিন তারচুলের রং ফ্যাকাশে হয়েযাচ্ছে। মা তাকে ডাক্তারেরকাছে নিয়ে গেলে তিনি সানারখাদ্যাভ্যাস জানতে চান। সব শুনেতিনি সানার গৃহীত খাবারে একটি বিশেষ উপাদানেরঘাটতি রয়েছে বলে মাকে
জানানএবং পরবর্তী জটিলতা এড়ানোর জন্য সানাকে সেইউপাদান সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন ৷
২। দশম শ্রেণির ছাত্রীপূর্ণির পড়াশোনার প্রচণ্ড চাপ। প্রতিদিন স্কুলছুটির পর সে হেঁটেবাসায় ফেরে। তারপর অতি দ্রুত তারঘামে ভেজা কাপড় পাল্টিয়েসে আবার বাইরে শিক্ষকেরকাছে পড়তে যায়। এ সময়ে মাতাকে ডাবের পানি, লেবুর শরবত কিংবা ফলেরসুপ-জাতীয় পানীয় খেতে দিলে পূর্ণিতা খেতে চায় না। দুপুর কিংবা রাতের খাবারের পরও সে পানিকম খায়। ফলে বেশ কিছুদিনযাবৎ তার শারীরিক সমস্যাহচ্ছে।
১।শম্পা ও লিটু ভাইবোন।তারা দুজনই স্কুলে পড়ে। স্কুল ছুটির পর লিটু প্রায়প্রতিদিনই বার্গার, স্যান্ডউইচ, ড্রিংকস ইত্যাদি খায়। মা লক্ষ করলেনলিটু দিন দিন মোটাহয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে শম্পাবয়সের তুলনায় কম লম্বা হচ্ছে।এ নিয়ে চিন্তিত মা একজন পুষ্টিবিদেরসাথে আলাপ করলে পুষ্টিবিদশম্পার জন্য প্রয়োজনীয় খাবারগ্রহণের পরামর্শ দিলেন এবং লিটুকে সঠিকখাদ্যাভ্যাস গঠনে মাকে মনোযোগীহতে বললেন ।
১। মিসেস শীলার বয়স ৪৫ বছর। তার সংসারের রান্নার কাজ, কাপড় ধোয়ার কাজ, ঘরের কাজের জন্য দুজন গৃহকর্মী রয়েছে। তিনি প্রতিদিন দেরিতে ঘুম থেকে উঠেন। সকালে পরটা, মাংস, মিষ্টি, ডিম দিয়ে নাশতা করেন। তারপর খবরের কাগজ ও টি.ভি নিয়ে বসেন। দুপুরে গোসল করে খেয়ে দেয়ে ২ ঘণ্টা ঘুমান। দুই বেলাতেই মাছ, মাংস ছাড়া ভাত খান না। অনেক রাত পর্যন্ত তিনি টি.ভি দেখে রাতের খাবার খেয়েই শুয়ে পড়েন। কিছুদিন পর তার দেহের ওজন অনেক বেড়ে যায় এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
২। মাসুমা বেগম মধ্যবয়সী ভদ্রমহিলা। তার দেহের ওজনও বেশি। অসুস্থ বাবা-মার দেখাশোনা, দুইবেলা তাদের ইনসুলিন দেওয়া ও খাবারের ব্যবস্থা তাকেই করতে হয়। সংসারের যাবতীয় কাজ করতে গিয়ে তিনি কোনো চলাফেরার কোনো নিয়মশৃঙ্খলা মানেন না। তিনি মিষ্টি, পায়েস, সফট্ ড্রিংকস, জুস খেতে পছন্দ করেন। মাসুমার শরীর খারাপ হলে চিকিৎসক তাকে ভবিষ্যতের জন্য স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে বলেন।
২।মালা মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহিণী। দুই সন্তান স্কুলেপড়ে, স্বামী ও বৃদ্ধ মা-বাবা নিয়ে তারপরিবার । তার বাচ্চাদেরমাংস-জাতীয় খাবার বেশি পছন্দ। তাদেরকারণে প্রায় দিনই মাংস রান্নাকরা হয়। কিছুদিন হলোতার মায়ের বুকে ব্যথা করছে।ডাক্তার তার খাবারের দিকেবিশেষ নজর দিতে বললেন।
ক. মেনু কাকে বলে ?
খ. খাদ্য গ্রহণের উদ্দেশ্য কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. মালার মায়ের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণকী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মালার পরিবারে সকলের সুস্থতার জন্য সঠিক মেনুপরিকল্পনা অতি গুরুত্বপূর্ণ—তোমারমতামত দাও ।
যৌথ পরিবারের গৃহিণী মাহমুদা তার মেয়ের জন্মদিনে বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজনকে বাসায় দাওয়াত করেন। তিনি খাবারের মেনু তৈরি করেন এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কাজের দায়িত্ব ভাগ করে দেন । কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে তাকে ঐ দিন কয়েক ঘণ্টা বাইরে থাকতে হয়। বাসায় ফিরে কাজের অগ্রগতি না দেখে তিনি নিজের বুদ্ধি ও কৌশল প্রয়োগ করে সকলের সহযোগিতায় কাজকে যথাসময়ে সফল করে তোলেন।
ধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে লিপি কলেজে পড়ে। তার মা একজন গৃহিণী। তার বাবা মৃত্যুর কারণে পড়াশুনার ব্যয়ভার বহন করা হয়ে পড়ায় মা তাকে বিয়ে দিয়ে দেন। এদিকে স্বামীর সহযোগিতায় লিপি তার পড়াশুনা চালিয়ে যায়। তার স্বামীর ধারণা একজন প্রতিষ্ঠিত নারী নিজ পরিবার ও সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সোহেলীর বাবা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকার। সোহেনীও বাবার মতো ব্যাংকার হতে চায়। তাই সোহেলী ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। তার বাবা তাকে পড়াশুনার জন্য সার্বক্ষণিক সাহায্য করেন। অপরদিকে সোহেলীর মা মেয়ের নিয়মিত স্কুলে যাওয়া, পড়াশুনা করাসহ সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নেন ।
শোভা দেখতে তার মায়ের মতো লম্বা, ফর্সা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মনে করে শোভা ছোট ফুফুর মতোই হাসিখুশি। শোভার মামা গহর আলী রাঙামাটিতে বসবাস করেন। মামি চাকমা বংশোদ্ভূত, তাদের যমজ দুই মেয়ে রাইসা ও সামিহা। গহরের ছোট বোনের কোনো সন্তান না থাকায় মেয়ে সামিহাকে প্রতিপালনের জন্য ঢাকায় ছোট বোনের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। অপর মেয়ে রাইসা খুব কর্মঠ ও সুঠাম দেহের অধিকারী। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তিতে তটা উন্নত নয়। ঢাকার পরিবেশে সামিহা পড়াশুনায় বেশ বিচক্ষণ। সে মানসিক শক্তি ও বুদ্ধিমত্তায় খুব উন্নত হলেও অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
জেবার ছোট ছেলে জাবেন প্রায়ই সর্দি-কাশিজনিত সমস্যায় ভোগে। কয়েকদিন আগে খেলতে গিয়ে পা কেটে ফেলেছিল এখনও শুকাচ্ছে বড় মেয়ে জেরিন এসে বলল, “মা সন্ধ্যায় পড়তে গেলে বইয়ের অক্ষরগুলো অস্পষ্ট মনে হয়। আর অল্প আলোতে দেখতেও অসুবিধা হচ্ছে।” মা রেগে গিয়ে বলেন, “শুধু মাংস খেতে চাও। শাকসবজি, ফলমূল না খাওয়াটাই আজ তোমার এ অবস্থার জন্য দায়ী।”
হোমায়রা ও রুহি দুই বান্ধবী। তারা নবম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল থেকে ফেরার পথে হোমায়রা সফট ড্রিংকস এবং সন্ধ্যায় পড়তে বসার আগে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খায়। অবসর সময়ে কম্পিউটারে গেমস খেলে সময় কাটায়। অপরদিকে রুহির খাবারের প্রতি ততটা আগ্রহ নেই। সে ডিম ও দুধ খেতে চায় না। মা চেষ্টা করেন প্রতিদিনই তাকে দুধ বা ডিম জাতীয় খাদ্য খাওয়াতে। তাছাড়া মা যকৃৎ, ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি, ডাল ও ফল ইত্যাদির মধ্যে প্রতিদিনই দুটি বা তিনটি খাবার খাদ্য তালিকায় রাখেন।
সূচির গায়ের রং শ্যামলা। বান্ধবী লাভলীর জন্মদিনে যাবে বলে সূচি হালকা রঙের শাড়ি নির্বাচন করে। শাড়িটির জমিন হালকা ক্রিম রঙের কোমরের কাছে গাঢ় বেগুনি রঙের ফুল করা। অপরদিকে লাভলী ফর্সা ও সুঠাম দেহের অধিকারী। লাল রঙের জাঁকজমকপূর্ণ নকশা করা শাড়ি পরায় তাকে আরও সুন্দর দেখাচ্ছিল। সূচি লাভলীকে অভিনন্দন জানাতে যেয়ে বলে, “আজকে তোর নির্বাচিত শাড়িটিতে তোকে অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।”
দোলা , সোমা ও সাথী তিন বান্ধবী। দোলা দুই গজ পাতলা কাপড়ে রং করতে যেয়ে প্রথমে পানিতে কাপড় কাচার সোডা ও লবণ মেশায় এবং ফুটন্ত অবস্থায় পানিতে কাপড় উল্টেপাল্টে দিয়ে তুলে শুকিয়ে ইঞ্জি করে। সোমা কাপড়টিতে পেন্সিল দিয়ে সরল রেখা এঁকে রেখা বরাবর বড় বড় কাঁথা স্টিচ সেলাই করে সুতা টেনে গিট দেয় এবং রং করে। অন্যদিকে, সাথী নিজের জামা তৈরির কাপড়টিতে ভাঁজ দিয়ে বেঁধে দেয় এবং রং করে ।
রাফিয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে প্রতিদিন দেরীতে ঘুম থেকে ওঠে এবং দেরীতে স্কুলে যায়। সন্ধ্যায় নিয়মিতভাবে টিভি সিরিয়াল দেখে সময় কাটায়। ক্লাসে পড়া পারে না। শিক্ষকের কাছে প্রায়ই বকা খায়। অন্যদিকে রাফিয়ার মা সোনিয়া বেগম সময় ও শক্তি অমূল্য সম্পদ মনে করেন। তিনি সংসারের সকল কাজ বুদ্ধিমত্তার সাথে কিছু কৌশল অবলম্বন করে সহজ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেন।
তন্ময়ের বাবা-মা উভয়েই উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তারা নিজেদের নিয়ে সবচসময় ব্যস্ত থাকেন। (ক্লাব পার্টিতে সময় কাটান । তাদের মধ্যে সবসময় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। ছেলের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশী টাকা-পয়সা দেন। তন্ময় পড়াশোনা ভালো করে না। বখাটে ছেলেদের সাথে সঙ্গ দেয়। একদিন তন্ময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাত্রে বাড়ি ফেরে। হঠাৎ এ অবস্থা দেখে বাবা-মা ভীষণ চিন্তিত হন। তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার বলেন, “একমাত্র আপনারাই পারেন তন্ময়ের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে।”
নিম্নবিত্ত পরিবারের জয়ার ২ সন্তান ও স্বামী নিয়ে অভাবী সংসার। ৪০ বছর বয়সে সে আবার গর্ভবতী হয় এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। গর্ভকালীন সময়ে সে পুষ্টিকর খাবার খায় না এবং নিজের শরীরের কোনো খেয়াল রাখে না। তার শিশু সন্তান তনুর বর্তমান বয়স ২ বছর। সে জন্মের পর থেকে কথা বলতে পারে না, সাড়া দেয় না, কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে না। হাঁটা চলার বিকাশও কম।
দশম ছাত্রী ঐশী। সে মোটা ভয়ে ঠিকমতো বাওয়া- দাওয়া করে না। ভাত, রুটি, আলু প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম খায়। এমনকি সে দুধও পছন্দ করে না। সে প্রায়ই অসুস্থ থাকে এবং স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। পড়াশোনায় ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারে না। সামান্য পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডাক্তার তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন।
মারুফ সাহেবের বয়স ৫৫ বছর। তিনি রত জেগে টিভি দেখেন এবং সকালে দেরীতে ঘুম থেকে ওঠেন। তিনি সারাদিন অফিসে বসে কম্পিউটারে কাজ করেন। খাসির মাংস তার খুবই পছন্দ। ইদানিং তার খারাপ লাগছে। তাছাড়া তার শরীরে একটা ক্ষত সারছে না বলে তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার তাকে ইনসুলিন নিতে বলেন এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের পরামর্শ দেন।
আবিরের মা ভুলের জন্য আবিরকে বকাঝকা করেন না। ভালো কাজের প্রশংসা করেন। এতে তার আত্মবিশ্বাস ও কাজের প্রতি উৎসাহ বেড়ে যায়। অন্যদিকে আবিরের খালাতো ভাই আরমান চঞ্চল। তাকে সবাই বকাঝকা করে। হাতের লেখা খারাপ ও বানান ভুলের কারণে পরীক্ষায় খারাপ করে। পড়ালেখায় উৎসাহ কমে যায় ও আত্মবিশ্বাস হারাতে থাকে। মা চিন্তিত হয়ে শিক্ষকের কাছে গেলে শিক্ষক বলেন, “আরমানের মনোস্তাত্ত্বিক চাহিদা পূরণই পারে তার উৎসাহ ফিরিয়ে আনতে।”
একজন দিনমজুর। পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ায় এবং ঘুম না হওয়ায় সে অস্থিরতাবোধ করে। ইদানীং মাঝে মাঝে তার হাত ও পা অবশ হয়ে যাচ্ছে এমনটি অনুভব করে। তার ছোট বোন সালেহা তৃতীয় সন্তান জন্ম দেওয়ার পর দেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস জাতীয় উপাদান কমে যাওয়ায় কোমরে ও পায়ের ব্যথায় দাঁড়াতে পারে না । সে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
মিরা পারদর্শিতার সাথে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে পরিচালনা করেন। তার শাশুড়ি লক্ষ করেন যে বাড়িতে কেউ আসলে মিরা তাদের যত্ন নিতে এবং দেখাশুনা করতে বিরক্তবোধ করেন। মিরার শাশুড়ি সুদক্ষতার সাথে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাতনীকে ঘর গোছানোর এবং ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাতীকে গাছের পরিচর্যার দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে তিনি তাদের কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন।
স্বামী, দুই মাসের মেয়ে ও নার্সারি পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে শায়লার সংসার। প্রতি মাসে তিনি নিজের ও বাচ্চাদের জন্য নতুন নতুন পোশাক কিনেন। হঠাৎ ছোট ছেলেটি গুরুতর অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য বান্ধবীর কাছ থেকে অনেক টাকা ধার করেন। অপরদিকে তার বান্ধবী নীলা নিজের কাজে প্রেসার কুকার ও ওভেন ব্যবহার করেন । আবার কাজ শেষে তিনি প্রতিটি সরঞ্জাম নির্দিষ্ট জায়গায় গুছিয়ে রাখেন।
১৩ বছর বয়সী আদি নিয়মিত স্কুলে যেত এবং পড়াশুনায় বেশ মনোযোগী ছিল। কিন্তু কয়েকদিন যাবৎ সে স্কুলে যাওয়ার সময় বিভিন্ন বয়সের সাথে মেলামেশা করে। সে যথাসময় স্কুলে না গিয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করে এবং ধূমপান করে। অপরদিকে ১৪ বছর বয়সী আদির খালাত বোন রেবার বাবা-মা উভয়ই চাকরিজীবী। বাড়িতে সে প্রায়ই একা থাকে। তার মা লক্ষ করলেন যে, সে সামান্য কথায় রেগে যায় এবং রাতে একা একা পায়চারি করে। তার বাবা-মা ডাক্তারের পরামর্শ নিলে ডাক্তার তাদের মেয়েকে পর্যাপ্ত সময় দিতে বলেন।
৩৬ বছর বয়সী লামিয়া তার প্রথম সন্তান জনি জন্ম দেন। গর্ভাবস্থায় তিন মাসের মধ্যে তার মম্পস্ হয় এবং সাথে খিচুনী হয়। রনি বড় হতেই লক্ষ করা যায় যে তার আচরণ স্বাভাবিক নয়। অপরদিকে রনির খালাতো ভাই রিদম ইশারায় ভাব বিনিময় করে এবং টিভির কাছে গিয়ে শব্দ শুনতে চেষ্টা করে। ডাক্তারের কাছে নিলে তিনি বলেন, “রিদমের সমস্যা রোধ করা সম্ভব, যদি বাবা-মা সচেতন হয়ে তার পাশে থাকেন।
লত ভাষারীতির মিশ্রণ দূষণায় ।। করিম সাহেব তার ছেলের জন্মদিনে বাড়িতে মিলাদের আয়োজন করেন। মিলাদে সমুচা, সন্দেশ ও স্যান্ডউইচ মোড়কজাত করে পরিবেশন করেন। ফলে অতিথিরা দ্রুত বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। অপরদিকে যৌথ পরিবারের গৃহিণী মরিয়ম বেগম প্রতিদিন ছেলেমেয়েদের পছন্দ অনুযায়ী শুধু মাংস রান্না করেন। এদিকে ফাभে যিনি অন্য একটি যৌথ পরিবারের গৃহিণী প্রতিদিন মাছ-মাংস, শাক- সবজি ছাড়াও মিষ্টিজাতীয় খাবার যেমন- ফিরনী পায়েস রান্না করেন।
ৰুমা ও সুমা দুজনেই সহকর্মী। রুমা পোশাক নির্বাচন ও রুয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। তার ক্রয়কৃত স্পর্শ করলে বেশ ঠাণ্ডা অনুভব হয় এবং সহজে ধোয়া যায় এবং সেগুলো পড়লে নকশাগুলো ভাঁজে ভাঁজে ঝুলে থাকে। অন্যদিকে সুমার ব্যবহৃত তনুর পোশাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরামদায়ক হলেও সে তার পরিধেয় বস্ত্রগুলো শক্তিশালী এসিডে ধোয়া এবং বাইরে থেকে এসে বাতাসে না শুকিয়ে ভাঁজ করে রেখে দেয়। ফলে কালো কালো দাগ পড়ে যায়।
শিমলার স্বাস্থ্য ভালো এবং উচ্চতায় ৪ ফুট ২ ইঞ্চি। পূজার পোশাক কিনতে গিয়ে আড়াআড়ি রেখার পোশাক পছন্দ করে। কিন্তু চিন্তাভাবনা করে শিমলা লম্বা রেখার পোশাক কিনে। অপরদিকে শিমলার মা তার ৫ বয়সী ছোট মেয়ে শিমুর জন্য এক রঙের ২ গজ কাপড় ি সাথে জরির লেস ও পুঁতি কিনে দর্জিকে জামা তৈরি করতে দেন এবং বলেন বুকের সামনের নিচের দিকে বক্রাকারে পর পর লেস এবং পুঁতি লাগিয়ে নকশা তৈরি করতে।
ঊর্মি ও আঁখি দুই বান্ধবী একই কলেজে পড়ে। কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঊর্মি ও আঁখি একই রঙের পোশাক পড়বে বলে স্থির করে। ঊর্মি মোটা ও খাটো দেহাকৃতির এবং দেহের রং শ্যামলা। ঊর্মি বড় ছাপার গাঢ় লাল বর্ণের পোশাক পড়ে। ফলে ঊর্মিকে আরও মোটা ও খাটো দেখায়। অপরদিকে আঁখি লম্বা, পাতলা দেহাকৃতির এবং গায়ের রং ফর্সা। আঁখি আড়াআড়ি রেখার লাল বর্ণের পোশাক পরে। পোশাকের সাথে মানানসই সাজসজ্জার সমন্বয়ে তাকে অপরূপ দেখায়।
করিম মিয়া একজন ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ী। অল্প পুঁজিতে তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরে পুরাতন কাপড় ক্রয় করেন। তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি বিভিন্ন ডিজাইনের পাপোস, কাঁথা ইত্যাদি তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে তিনি আরও বেশি কর্মী নিয়োগ করেন এবং আয়-ব্যয়ের কাজ নিজে তদারকি করেন। বর্তমানে করিম মিয়া একটি ফ্যাক্টরির মানিক।
৯ম শ্রেণির ছাত্রী মিনা বেশ উৎসাহী ও কৌতূহলী। সে বিদ্যালয়ের গার্ল গাইডস, রেডক্রিসেন্টসহ সকল সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। কয়েকদিন আগে একটি দুর্ঘটনায় তার বাবা মারা যায়। এরপর থেকে সে রাতে ঘুমাতে পারে না এবং তেমন কথাও বলে না। সারাক্ষণ চুপচাপ থাকে। বড় বোন শায়লা সব সময় তার পাশে থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা করে।
আরিফের বয়স ৫ বছর। সে অক্ষর চিনতে ভুল করে এবং অক্ষর উল্টা করে লিখে। সে কোনো বিষয়ে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না আরিফের বাবা তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আরিফের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে বলেন। তিনি আরও বলেন, তার স্ত্রীর পরবর্তী গর্ভকালীন সময়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে যাতে পরবর্তী সন্তান সুস্থ হয়।
মি. শফিক সাহেব ও তার স্ত্রী দুজনই খুব ভোজন রসিক। তারা দুজনই পোলাও, চর্বিযুক্ত মাংস, মিষ্টি, পায়েস এমনকি ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন। কিছুদিন অন্তর তাদের দুজনই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তারা দুজনই ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার শফিক সাহেবকে নিয়মিত রঙের চাপ মাপাতে ও চর্বিযুক্ত খাবার খেতে নিষেধ করেন। আর তার স্ত্রীকে মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে নিয়মিত হাঁটতে বলেন এবং তিনি দুজনকেই নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের পরামর্শ দেন ।
আলিম ও কলিম দুই ভাই। তাদের বাবা তাদেরকে সমান আকার ও আয়তনের দুটি করে কক্ষ দেন। আলিমের আয় বেশি হওয়া সত্ত্বেও তিনি তার কক্ষে আধুনিক নকশার ডিভান, ডাইনিং টেবিল ও আয়নাসংবলিত আলমারি দিয়ে সাজিয়েছেন। অপরদিকে কলিম তার কক্ষে দামি ও বড় খাট, ওয়ারড্রাব, আলমারি, সোফাসেট ও ড্রেসিং টেবিল ইত্যাদি দিয়ে সাজানোর ফলে কক্ষটি সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তার বন্ধু তার বাসায় বেড়াতে এলে তাকে সঠিকভাবে আসবাবপত্র বিন্যাসের পরামর্শ দেন।
পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী রহিমা মাধ্যমিকে পড়ুয়া দিপা ও একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া নিয়ে খুবই থাকেন। ছেলে বেশ মেধাবী বিধায় ডাক্তার বানাবে এ আশায় নবম শ্রেণি বিজ্ঞান বিষয়ে পড়িয়ে আসছেন। বাবা ভাবেন এখন বিজ্ঞান শিখে কিছু হবে না। তাকে অন্য বিষয়ে পড়ার জোর তাগিদ দেন। এতে ছেলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে মা ও বাবার মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। রুবেলের চাচা তার বাবাকে সন্তানের আগ্রহের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলেন।
জনাব রব্বানী এবং তার স্ত্রী জমিলা ব্যবসা ও চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না। বরং সন্তানদের অতিরিক্ত শাসনে রাখেন। তাছাড়া তারা দুষ্টুমি করলে জমিলা তাদেরকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রাখেন। জমিলার শাশুড়ি সন্তানদের এভাবে শাসন করতে নিষেধ করেন এবং সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য তাদেরকে যথেষ্ট সময়দানের পরামর্শ দেন।
মিসেস লাকি একজন গার্মেন্টস কর্মী। ৩৮ বছর বয়সে তিনি একটি স্বাভাবিক ওজনের সুন্দর কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তিনি লক্ষ করেন বয়স বাড়লেও তার মেয়ে স্বাভাবিকভাবে বসতে ও দাঁড়াতে পারছে না। অপরদিকে তার সহকর্মীর ৩ বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ছেলেটি কোনো নির্দেশনা সহজে বুঝতে পারে না। কিছু শোনার সময় কানে হাত দিয়ে শোনার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে ডাক্তার বলেন গর্ভধারণের সময় মায়ের বয়স ও সঠিক পরিচর্যা সুদ্ধ শিশু জন্মদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সাহেব শহরের ছোট একটি বাসায় বাস করেন। ছেলের তিনি বেশকিছু বন্ধুকে দাওয়াত দেন। ঐ দিন তিনি তৈরি খাবার ও থালা-বাসন ইত্যাদি টেবিলে সাজিয়ে রাখেন। অতিথিরা নিজ হাতে যার যার থালায় পরিমাণমতো খাবার নিয়ে ইচ্ছেমতো জায়গায় বসে খেয়ে নেন। অপরদিকে তার ভাইয়ের স্ত্রী প্রতিদিন সবার জন্য একই রকম খাদ্য প্রস্তুত করেন। এতে ভাই ও পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই না খেয়ে থাকেন।
রহিম মিয়া একজন ক্ষুদ্র পুরাতন কাপড় ক্রেতা। অল্প পুঁজিতে সে & কাপড় ক্রয় করে তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের কাঁথা, ঘরের পর্দা তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করে। এদিকে তার ছেলে রাজুকে তিনি স্থানীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যবসায় কাজে লাগান। রাজু তার ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম ও একাগ্রতার মাধ্যমে বাবার ক্ষুদ্র ব্যবসাকে নতুন ফ্যাক্টরিতে রূপ দিয়েছে।
" রফিক ও শফিক সাহেব দুই বন্ধু। রফিক সাহেব সারাক্ষণ বসে কাজ করেন। তিনি চর্বিযুক্ত গরুর মাংস, নোনা ইলিশ ও চানাচুর খেতে ভালোবাসেন। ইদানিং তার ওজন বেড়ে গেছে এবং খাদ্য হজমে সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে শফিক সাহেবও চর্বিযুক্ত গরুর মাংস, কলিজা, পরোটা খেতে ভালোবাসেন। একদিন তিনি অফিসে মাথা ঘুরে পড়ে গেলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার শফিককে প্রয়োজনীয় খাদ্যশক্তির চেয়ে কম খাদ্যশক্তি যুক্ত খাবার খেতে বলেন।
আমেনা নিম্নবিত্ত পরিবারের গৃহবধূ। তিনি দুপুরে দুই বছরের ছেলের জন্য খিচুড়ি, দশ বছরের মেয়ের জন্য ভাত, ডিম ও ডাল এবং বৃদ্ধ শাশুড়ির জন্য নিরামিষের ব্যবস্থা করেন। অন্যদিকে রহিমা মেয়ের আকিকায় অতিথি আপ্যায়নে বারান্দার এক কোনায় ১টি টেবিলে পোলাও, রোস্ট, কাবাব, সবজি, সালাদ ও মিষ্টি রাখেন। অন্য আর একটি টেবিলে খাবারের প্লেট, চামচ, গ্লাস, বাটি রাখেন। ফলে অতিথিরা নিজেদের পছন্দমত খাবার গ্রহণ করতে পারে।
রেবার জন্মদিনে তার বাবার দেওয়া সিল্ক শাড়িটি পরে এবং পরের দিন শাড়িটিকে আলমারিতে তুলে রাখে। কিছুদিন পর আলমারি থেকে শাড়ি বের করে দেখে, শাড়িটি পোকায় কাটা ও ময়লা। রেবা সাবান দিয়ে শাড়িটি পরিষ্কার করে দেখল যে, শাড়ির রং হয়ে ছেঁড়া অংশটা আরও বড় হয়েছে। রেবার মা শাড়িটি দেখে বলেন, তোমার শাড়ি ধোয়ার পদ্ধতি সঠিক হয়নি। শাড়িটির ক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম ইথার, বেনজল ও ব্যবহারের পদ্ধতিটি সর্বোত্তম।